'এ-সময় অ-সময়'
- ইত্যাদি ব্লগ
- Jul 7, 2020
- 2 min read
Updated: Jul 23, 2020
ধূমকেতু
'অজ্ঞতা প্রায়শই জ্ঞানের চেয়ে বেশী আত্মবিশ্বাসের জন্ম দেয় '
- চার্লস ডারউইন
এক অদ্ভুত অস্থিরতার সময় চলছে বিশ্ব জুড়ে। অতিমারি ,অর্থ সঙ্কটে আমাদের দেশ, আর তার সাথে তাল মিলিয়ে চলেছে ফ্যসিস্ট রাজত্বে বিষাক্ত মানসিকতার চাষ। কেন্দ্র আর রাজ্য জুড়ে সাম্প্রদায়িক শক্তির দিন দিন শক্তি প্রকাশ। গয়েবেলসের সেই মত প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে। বার বার সেই মিথ্যেকে বলে যাওয়া, যাতে একদিন সেটা সত্যি হয়ে যেতে পারে। কর্ম শুন্য, দুমুঠো ভাতের জন্য লড়াই করা মুখগুলোকে উগ্র জাতীয়তাবাদের আফিম খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা। মধ্যবিত্তের সারাজীবনের প্রচেষ্টা আর ইচ্ছেগুলোকে যেন স্বপ্নের আবর্তে রাখা সেই দশমবার্ষিকী রাষ্ট্র ব্যাবস্থা – স্বপ্ন কখনোই সত্যি হয় না। আর সেই ব্যাবস্থা কে প্রশ্ন করলেই শাসকের কুৎসা। সরকারের পোষা সারমেয়দের চীৎকার, রাতারাতি আপনাকে পাকিস্থান, চীন আর তা না হলে নিদেনপক্ষে বাংলাদেশে চলে যাবার বিধান, অকথ্য গালিগালাজ আর কুখ্যাত আইটি সেলের ফেক অ্যাকাউন্ট থেকে কদর্য আক্রমণ। প্রাপ্ত বয়সী মাহাভারত কে শিশুপাঠ্য করার আপ্রাণ চেষ্টা। যাতে সোশাল মিডিয়া তে প্রকৃত দেশপ্রেমী হিসেবে পাওয়া যায় ‘লাইক এন্ড কমেন্ট’। এ এক বিচিত্র সময়ের সাক্ষী আমরা।
এই সেই সময়, যখন ঋষি কণাদ, শর্মিষ্ঠা, বরাহ্ মিহির, সুশ্রুত আর আর্যভট্ট দের এই দেশ ভারতবর্ষে হতে থাকে একের পর এক অবৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ড। কখনো কাঁসর ঘণ্টা বাজিয়ে অতিমারির ভাইরাস কে তাড়ানো কিমবা গরু র হিন্দু মানব জাতির কল্যাণে শ্বাস বায়ু অক্সিজেন উৎপাদনের তত্ত্বে পরে রাজার শীল মোহর। রাষ্ট্রের নেতৃত্বে গণতন্ত্রের তৃতীয় স্তম্ভ বিচার ব্যাবস্থা কে দিয়ে সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরির সফল প্রচেষ্টা হয়।
আজ কবির প্রশ্নে বিচারের বানী অট্টহাস্য করে ...
- তুমি কার?
- আমি রাষ্ট্রের ... আর আমি ধনীর।
আর রাস্তায় ভিক্ষে করা শিশুদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় সেই ধনীদের কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রের বিবেক।
এই সেই রাষ্ট্র যে, কোন এক প্রাতঃ রাশ এর টেবিলে রেল লাইনে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাওয়া শ্রমিক আর কর্মীদের পরিযায়ী আখ্যা দেয়। লাল রক্ত স্রোতে ভেসে থাকে শুধু ক-একটি ঝলসান রুটি।
মধ্যবিত্তের সংসারে আগুন লাগানোর প্রোপাগান্ডা, ধর্মকাম, বিচ্ছিন্নতা আর বিভেদকামী সাম্রাজ্যবাদ আজ এই অতিমারির দোসর। তাইত আক্রান্তের স্বাস্থ্য আজ বিকিয়ে যায় পুঁজিপতিদের হাতে।
ঘাস ফুলের পাঁকে আজ পদ্মের বীজ। খারাপ আর অতি খারাপ এর বীজগণিতে ব্যাস্ত মানুষ।
সময় আবার গান গেয়ে ওঠার।
‘দেশ সুদ্ধ লোক যতদিন খেতে পায়নি কমলা লেবু ...’
শুভবুদ্ধির লংমার্চে পা মেলান অসংখ্য রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ আর কাজি নজরুল
ধর্মসম্বন্ধে স্বাধীন মতাবলম্বী, যুক্তিবাদী আর প্রগতিশীল কুসংস্কার বিরোধী মনের অসংখ্য মানুষের মুখ সেই মিছিলে।হবেই জয়।
চরৈবতি।।
সৌজন্যঃ সঙ্গের ছবিটি সাফদার হাসমি অভিনীত 'হাল্লা বোল' পথনাটীকার একটি দৃশ্য
Comments